রবিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৪

হাড় ভাঙা প্রতিরোধে করণীয়

 

হাড় ভাঙা প্রতিরোধে করণীয়

বয়স্ক ব্যক্তির হাড় ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ অস্টিওপোরোসিস। এটি হলে হাড়ের ঘনত্ব কমে গিয়ে তাতে ছিদ্র হয় ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। ফলে অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যায়। অস্টিওপোরোসিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ২০ অক্টোবর পালিত হয় ‘বিশ্ব অস্টিওপোরোসিস দিবস’। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য, ‘সেই নো টু ফ্রাজাইল বোন’। 



কীভাবে বুঝবেন

মুশকিল হলো, হাড় ভেঙে না যাওয়া পর্যন্ত বাইরে থেকে অস্টিওপোরোসিসের তেমন লক্ষণ বোঝা যায় না। তবে মেরুদণ্ডের হাড়ের ঘনত্ব কমে গেলে কারও কারও উচ্চতা কমে যেতে থাকে বয়সের সঙ্গে।
কারণ

অস্টিওপোরোসিসের প্রধান কারণ বয়স বৃদ্ধি। যত বয়স বাড়ে, তত হাড়ের ঘনত্ব কমে। কিন্তু এই ঘনত্ব নির্ধারণ হয় শৈশব-কৈশোরেই। অল্প বয়সে কারও হাড়ের ঘনত্ব মজবুতভাবে তৈরি হলে বয়স বাড়ার সঙ্গে এত ঝুঁকি থাকে না।

নারীদের মেনোপজের পর হরমোন ইস্ট্রোজেনের মাত্রা হঠাৎ কমে যায়। তখন হাড়ের ঘনত্বও দ্রুত কমতে থাকে। পুরুষের ক্ষেত্রেও হাইপোগোনাডিজম বা স্কেস হরমোনের মাত্রা কমলে হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে।

হাড়ের সুস্থতার জন্য ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি খুব দরকার। এর ঘাটতিতে হাড়ের ঘনত্ব কমে।

স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে হাড়ের ঘনত্ব কমে। আরও কিছু ওষুধ দীর্ঘ মেয়াদে হাড়ের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

কিছু দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসসহ কিছু বাতরোগ, থাইরয়েডের সমস্যা, পরিপাকতন্ত্রের হজম বা শোষণের সমস্যা ওই সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।

ধূমপান, অ্যালকোহলও হাড়ের জন্য ক্ষতিকর। 



প্রতিরোধ

শৈশব থেকে সুষম ও সঠিক পুষ্টি অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে। বিশেষ করে বাড়ন্ত বয়স, গর্ভাবস্থা ও ব্রেস্ট ফিডিংয়ের সময় এবং মেনোপজের পরও বয়স্ক ব্যক্তিদের যথেষ্ট ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার দিতে হবে। দুধ, দই, পনির, দুগ্ধজাত খাবার, বাদাম ইত্যাদিতে ক্যালসিয়াম আছে। ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে সূর্যের আলোতে।

নিয়মিত ব্যায়াম ও অ্যাকটিভিটি হাড় মজবুত করে।

ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করুন।

অস্টিওপোরোসিস বাইরে থেকে বা লক্ষণ দেখে বোঝা যায় না, কিন্তু আপনার ঝুঁকি কতটুকু, তা নিরূপণ করা যায়। অস্টিওপোরোসিস শনাক্ত করতে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির ডেক্সা স্ক্যান বা বোন মিনারেল ডেনসিটি পরীক্ষা করতে হবে। রিস্ক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে ঝুঁকি নির্ণয় করা সম্ভব।

বিশ্বে প্রতিবছর লাখ লাখ ব্যক্তি অস্টিওপোরোসিসজনিত হাড় ভাঙার শিকার হয়ে শয্যাশায়ী হন। হাড় ভাঙার পর মৃত্যুঝুঁকিও বাড়ে। গড় আয়ু বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যাও। কিন্তু বয়স্ক ব্যক্তিদের সুস্থ, সুন্দর জীবনযাপন নিশ্চিত করতে অস্টিওপোরোসিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

অধ্যাপক রওশন আরা

মেডিসিন ও রিউমাটোলজি বিশেষজ্ঞ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ।



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: