মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

যানজট উপেক্ষা করে এবার আকাশপথেই চলবে এয়ার ট্যাক্সি

 

এবার যানজট উপেক্ষা করে আকাশপথেই চলবে এয়ার ট্যাক্সি

অ্যাপ ক্যাবের দৌলতে স্মার্টফোনের সাহায্যে সহজেই অনেক শহরে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যাওয়া যায়৷ এবার যানজট উপেক্ষা করে আকাশপথেই ট্যাক্সি চালানোর উদ্যোগ চলছে৷

অনেক স্টার্টআপ কোম্পানি বিদ্যুতচালিত ট্যাক্সির কনসেপ্ট ও মডেল সৃষ্টি করছে৷এমন যানের বাজারও বাড়ছে, অনেক কোম্পানি প্রতিযোগিতায় নেমেছে৷ এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ টোমাস এম ফ্রিসাখার বলছেন, আমার মতে, কয়েক ডজন থেকে শুরু করে হয়তো একশোরও বেশি কোম্পানির মধ্যে কয়েকটি টিকে যাবে৷ 



মার্কিন বিমানবাহিনী অদূর ভবিষ্যতে পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে এয়ার ট্যাক্সি চালু করার পরিকল্পনা করছে৷ এশিয়ার গাড়ি কোম্পানি হিউন্ডে ও এক্সপেং-ও সেই ব্যবসায় পা রাখতে চায়৷ তারা ইলেকট্রিক গাড়িতে একই ধরনের ব্যাটারি ব্যবহার করে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক এয়ার ট্যাক্সি কোম্পানি ২০২৫ সালে নিউ ইয়র্ক শহর থেকে নেওয়ার্ক বিমানবন্দরে যাত্রী পরিবহণ শুরু করতে পারে৷ জার্মানির অটোমোবাইল ক্লাব এডিএসি আকাশপথে উদ্ধারকাজের জন্য ভোলোকপ্টার ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে৷

ভোলোকপ্টার কোম্পানির কর্মকর্তা অলিভার রাইনহার্ট বলেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমাদের আকাশযানের দাম হেলিকপ্টারের তুলনায় অনেক কম৷ ধারাবাহিক রক্ষণাবেক্ষণের খরচও কম৷

আকাশপথে পরিবহণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিধিনিয়ম অত্যন্ত কড়া৷ কোনো আকাশযান উৎপাদন শুরুর আগে অনেক পরীক্ষায় সেটিকে পাশ করতে হয়৷ দুর্ঘটনার ঝুঁকি একশো কোটি ফ্লাইট আওয়ার্সে মাত্র এক বার৷ অলিভার রাইনহার্ট দাবি করেন, তাদের নিরাপত্তার বিধিনিয়মও হুবহু ইউরোপে যে কোনো যাত্রীবাহী বিমানের মতো৷ 



ইউরোপীয় ইউনিয়নের এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি ইউরোপের আকাশে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে৷ এয়ার ট্যাক্সি চালানোর জন্য সুনির্দিষ্ট নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে৷ পাইলটদের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আসছে৷ তাদের নতুন সার্টিফিকেশন ও প্রশিক্ষণ কোর্স করতে হচ্ছে৷

ইএএসএ প্রধান জুসেপে স্কানাপেভো বলেন, আমরা যে সব বিধিনিয়ম প্রকাশ করেছি, তার আওতায় আমরা ধরে নিচ্ছি যে বিমান বা হেলিকপ্টরারের জন্য কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স আছে, এমন ব্যক্তি সেই যান চালাবেন৷ তার জন্য নির্দিষ্ট জ্ঞান, দক্ষতা ও ক্ষমতার প্রয়োজন৷

ভোলোকপ্টারই প্রথম কোম্পানি হিসেবে পাইলট প্রশিক্ষণের অনুমোদন পেয়েছে৷ এখন তারা এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি স্থির করছে৷ অলিভার রাইনহার্ট বলেন, আমাদের কমার্শিয়াল লাইসেন্স পাওয়া এমন পাইলটের প্রয়োজন, যিনি বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে যাত্রীবাহী বিমান অথবা হেলিকপ্টার চালিয়েছেন৷ তাঁকে শুধু নতুন যান চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে৷ 



প্রশিক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, তুষারপাত, বজ্রবিদ্যুতসহ বৃষ্টি ও উত্তাল বাতাসের মতো জরুরি পরিস্থিতিতেও পাইলটকে এয়ার ট্যাক্সি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে৷ প্রযুক্তিগত সমস্যা ও সিস্টেমে গোলোযোগও সামলাতে হবে৷ পাইলটদের জন্য টেকঅফ ও ল্যান্ডিং-ও বিশেষ স্ট্রেসের কারণ৷ এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ টোমাস এম ফ্রিসাখার মনে করিয়ে দেন, যে পরিসংখ্যান অনুযায়ী টেকঅফ ও ল্যান্ডিং পর্যায়েই সবচেয়ে বেশি অঘটন ঘটে৷

এয়ার ট্যাক্সি সত্যি বড় আকারে চালু হলে সম্পূর্ণ নতুন এয়ার রুট এবং নতুন ট্রাফিক বিধিনিয়মের প্রয়োজন হবে৷ ইউরোপের আকাশে নতুন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হিসেবে ইউ-স্পেস সিস্টেম কার্যকর করা হচ্ছে৷

স্কানাপেভো বলেন, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে আমরা কিছু নতুন নীতি তুলে ধরছি৷ কিন্তু ‘হাই স্পেস' প্রত্যেক সদস্য দেশের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে৷ 



প্রশ্ন হলো, বাস্তবে গোটা বিষয়টা ঠিক কেমন হবে এবং কীভাবে কাজ করবে?

জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টারের বিয়াংকা শুখার্ট বলেন, উড়াল স্থির হলে ভার্টিপোর্টে এয়ার ট্যাক্সি অপেক্ষা করবে৷ সরাসরি সেই যানে উঠে আকাশপথে একই শহর, পাশের শহর অথবা পছন্দ অনুযায়ী অন্য কোথাও চলে যাওয়া যায়৷

বাজারে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে৷ ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২০০টি শহরে এয়ার ট্যাক্সিব্যবহার করা হতে পারে৷



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: