সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪

প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবিতে রাজপথে নামবে শিক্ষার্থীরা


 

প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবিতে রাজপথে নামবে শিক্ষার্থীরা

 

 
আড়াই মাসের ব্যবধানে শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে দ্বিমুখী বক্তব্য দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। তার এমন দ্বৈতাচারে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশার। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। তারা এখন প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়ার কথা জানিয়েছেন। এদিকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন। তার এই পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। উনি যদি তার বক্তব্যে অটল থাকেন তাহলে বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে যাবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে দ্রুতই রাজপথে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। গতকাল কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দায়েরের সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। 

আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। প্রেসিডেন্ট তার পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন, দ্রুত তাকে পদত্যাগ করতে হবে। দ্রুতই প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে রাজপথের কর্মসূচি ঘোষণা করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কোনোভাবেই আর রাষ্ট্রপতিকে পদে দেখতে চাই না। এর আগে ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার। আসামি হিসেবে আছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সেক্রেটারি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা সভাপতি ও সেক্রেটারিও। ৩৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে ১ হাজার অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছে। 


তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর রাজনীতি করার জন্য দেশে ফিরতে পারবে না। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান, প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগ করেছিল স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা। মৌখিকভাবে এ পদত্যাগ করা হয়। পদত্যাগপত্র নিয়ে বঙ্গভবনে যাওয়ার কথা থাকলেও ছাত্র-জনতা গণভবনের কাছাকাছি চলে আসলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় খুনি হাসিনা।

এক ভিডিও বার্তায় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শক্তির উত্থান ও পুনর্বাসন ঠেকাতে দল-মত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন প্রেসিডেন্ট বলেছেন শেখ হাসিনা তার কাছে কোনো পদত্যাগপত্র জমা দেননি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন আবারও বিভিন্ন পাঁয়তারা শুরু করেছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গা স্বৈরাচারের পতিত আত্মারা বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে আমরা পৃথক হয়েছে যার কারণে একটি গ্যাপ তৈরি হয়েছে। যার কারণে এই গ্যাপটির সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা যদি দলীয় স্বার্থে আলাদা হয়ে যাই তাহলে আওয়ামী লীগ আবারও সুযোগ নিবে। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে।


 বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘তার (প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন) মতো মানুষ, আজকে তিনি বলছেন শেখ হাসিনার রিজাইন পেপার নাকি তিনি দেখেননি। শেখ হাসিনার রিজাইন পেপার যদি তিনি নিজে না দেখেন তাহলে তার বিরুদ্ধে কী করা দরকার, কী ব্যবস্থা নেয়া দরকার, তার জায়গা কোথায় হওয়া দরকার সেটা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ নতুন করে নির্ধারণ করবে।’ 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘১৬ বছরের অন্যায়, অত্যাচার, কুকর্মের উপযুক্ত শাস্তি না পেয়ে সন্ত্রাসীরা বের হয়ে আসার চেষ্টা করছে। আমরা আবার রাজপথে নামার আগে এসব খুনি ও তাদের দোসরদের গ্রেপ্তার করুন’।



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: